ওসমান গণি, বাকলিয়া (চট্টগ্রাম):
বিশ্বব্যাপী মহামারি আকার ধারণ করা করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে বার বার সতর্ক করার পরও, প্রশাসনের নোটিশ জারির পরও নির্দেশনা মানার তেমন কোনো আলামত দেখা গেল না চট্টগ্রাম নগরীর বাকলিয়া উপজেলার বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে। করোনার ঝুঁকি উপেক্ষা করেই মাক্স ছাড়া বাজারে ভিড় জমেছে স্বল্প ক্রেতাসহ সাধারন মানুষদের।
বুধবার বাকলিয়ার বউ বাজার ও জামাই বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়। সকলেই যেন প্রয়োজনে বাজার করতে এসেছে এমন মনে হলেও বাস্তব চিত্র তার ভিন্ন। বাজারে আগত অধিকাংশ লোকের হাতেই নেই বাজারের ব্যাগ। তারা প্রয়োজন ছাড়াই বাজারে ঘুরা ফেরা করে এবং বাজারের আশপাশের গলিতে আড্ডা জমায়। মাঝে মাঝে পুলিশের গাড়ি টহল দিলেও সুফল বয়ে আনেনি এতে। পুলিশের উপস্থিতি দেখলে সবাই অলিগলিতে লুকিয়ে যায়। বিরাজ করে নিরবতা। কিন্তু তা সাময়িক, কয়েক মিনিটের জন্য। পুলিশ চলে গেলেই আবার সবাই রাস্তায় নেমে আসে। যা নিয়ে চিহ্নিত এলাকার সচেতন মহল।
বউ বাজারে দেখা যায়, বাজারের ভেতর ও বাইরের অংশ আগের মতোই জমজমাট। বিক্রেতারা অন্যান্য দিনের মতো পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছেন, আর স্বাভাবিক দিনের মতো এসেছেন ক্রেতারাও।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সরকার ঘোষিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত ১০ দিনের জন্য গণপরিবহন বন্ধ রাখা হয়েছে। বিনা প্রয়োজনে বাসা থেকে বের হতে বারণ করা হয়েছে নাগরিকদের। আর প্রয়োজনের ক্ষেত্রেও একাধিক ব্যক্তি একত্রে চলাচল করতে পারবেন না। সবাইকে মাস্ক, হ্যান্ড গ্লাবসসহ নিরাপত্তা সরঞ্জাম পরতে বলা হয়েছে।
যদিও এর প্রয়োগ দেখা যায়নি পুরো বাজারে। বিক্রেতারা আর ক্রেতাদের মধ্যে দুই-চারজন মাস্ক ব্যবহার করলেও বেশিরভাগ মানুষই তা ব্যবহার করছেন না। বাজারে চলাচল করছেন ভিড় ঠেলে। যা বিশেষজ্ঞদের মতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের উপযোগী পরিবেশ।
একই চিত্র দেখা গেছে বাকলিয়ার জামাই বাজারে। এখানে বাজারের মূল অংশে ক্রেতাদের আনাগোনা অনেক। প্রয়োজনের তুলনায় চলাচলের জায়গা কম থাকায়, একে অন্যন্য ধাক্কা দিয়েই চলতে হচ্ছে। পাশাপাশি বিক্রেতাদের হাতে নেই কোনো গ্লাবস, মুখে নেই মাস্ক। বাজার করতে আসা ক্রেতাদের বেশির ভাগেরই একই দশা। একজনের কাছে মাস্ক না পরার কারণ জানতে চাইলে তিনি ইনফো বাংলাকে বলেন, ‘আমি মাস্ক পরতে পারি না। দম বন্ধ হয়ে আসে।‘
একই অজুহাত অনেকেরই। বিক্রেতাদের অজুহাত, মাস্ক পরলে ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলতে অসুবিধা হয়।
এদিকে ছবি তুলতে গেলে পকেট থেকে মাস্ক বের করে তা মুখে পরেছেন অনেক বিক্রেতাই।
বাজারের বাইরের অংশে দেখা গেল বাজারসংশ্লিষ্ট মানুষের পাশাপাশি স্থানীয় বাসিন্দাদের যাতায়াত। প্রতিদিনের মতো ভিড় না থাকলেও লোক সমাগম একেবারেই কম না। আবার মূল বাজারের বাইরে সড়কে বসা ভ্রাম্যমাণ দোকানিরাও কোনো ধরনের নিরাপত্তা সরঞ্জাম না পরেই বিকিকিনি চালিয়ে যাচ্ছেন। নিরাপত্তার ভাবনা নেই ক্রেতাদের মাঝেও। এধরনের অনিরাপদভাবে বাজারে বেচাকেনার তথ্য পাওয়া গেছে, বউ বাজার, জামাই বাজার ও দেওয়ান বাজারসহ বিভিন্ন বাজার থেকে।