বঙ্গনিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক:
১৫ আগস্ট ভুয়া জন্মদিন পালন ও চিহ্নিত স্বাধীনতাবিরোধীদের গাড়িতে জাতীয় পতাকা তুলে দেয়ার ঘটনায় করা দুই মামলায় হাইকোর্ট থেকে জামিন পাননি বেগম খালেদা জিয়া।
বিএনপি চেয়ারপারসনের আবেদন দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য বিচারিক আদালতকে নির্দেশ এসেছে উচ্চ আদালতের পক্ষ থেকে।
বৃহস্পতিবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেয়।
আদালতে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে যুক্তি দেন তার আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী ও খন্দকার মাহবুব হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। সঙ্গে ছিলেন এ কে এম আমিন উদ্দীন।
বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে একাত্তরের খুনি বাহিনী আলবদর নেতা মতিউর রহমান নিজামী ও আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদকে মন্ত্রী বানান খালেদা জিয়া। পাকিস্তানের দোসর দুই জনের গাড়িতে জাতীয় পতাকা দিয়ে দেশের অবমাননার অভিযোগ এনে ২০১৬ সালের ৩ নভেম্বর ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেন জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এবি সিদ্দিকী।
মামলাটিতে ২০১৭ সালের ১২ নভেম্বর খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়। কিন্তু পুলিশ সে আদেশ পালন করেনি।
গত ৮ ফেব্রুয়রি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার পর গত ১৭ মে এই মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ এসেছে আদালতের পক্ষ থেকে। একই দিন আগামী ৫ জুলাই নতুন তারিখ পড়েছে মামলাটির।
অন্যদিকে ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে জন্ম না হলেও জাতির পিতার প্রতি অসম্মান প্রদর্শন করতে এই দিন জন্মদিন পালনের অভিযোগ ২০১৬ সালের ৩০ আগস্ট অপর মামলাটি করেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গাজী জহিরুল ইসলাম।
এই মামলায় বিএনপি নেত্রীর বিরুদ্ধে ২০১৬ সালের ১৭ নভেম্বর গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। এই মামলাতেও গত ১৭ মে সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে গ্রেপ্তারের আদেশ দিয়ে আগামী ৫ জুলাই শুনানির পরবর্তী দিন নির্ধারণ করে ঢাকার আরেকটি আদালত।
এ অবস্থায় এই দুই মামলায় জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করা হয় খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে।
এই দুটি মামলার পাশাপাশি ২০১৫ সালে কুমিল্লায় বাসে পেট্রল বোমা হামলা চালিয়ে আট জনকে হত্যার ঘটনায় দুই মামলা এবং পুলিশ ভ্যানে হামলা মামলা এবং মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য নড়াইল আদালতে করা এক মামলায় জামিনের আবেদন করেন খালেদা জিয়া।
এর মধ্যে কুমিল্লার দুই মামলায় ২৮ মে হাইকোর্ট খালেদা জিয়াকে জামিন দেয়। তবে সে আদেশ আটকে দিয়েছে আপিল বিভাগ। ২৪ জুন অবধি এই আদেশ স্থগিত থাকবে জানিয়ে এর মধ্যে পূর্ণাঙ্গ আপিল করতে রাষ্ট্রপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালতের পক্ষ থেকে।
আর নড়াইলের মামলায় বিএনপি নেত্রীর জামিন আবেদন উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ হয়েছে। এই মামলাতেই ওই আদালতেই আবেদন করতে বলা হয়েছে হাইকোর্টের পক্ষ থেকে।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হয় খালেদা জিয়ার। রায়ের পরপর তাকে নাজিম উদ্দিন রোডের পুরোনো কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর থেকে তিনি সেখানেই আছেন।