নিউজ ডেস্ক, বঙ্গনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম.
খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের সোয়াত ভ্যালির মিনগোরা শহরে নিজ বাড়িতে ফিরছেন পাকিস্তানের নোবেল বিজয়ী তরুণি মালালা ইউসুফজাই।
প্রায় ৬ বছর পর গত বুধবার রাতে বাবা-মাসহ জন্মভূমি পাকিস্তানে ফেরেন মালালা। তালেবান জঙ্গিদের গুলিতে মারাত্মক আহত হয়ে ২০১২ সালে পাকিস্তান ছাড়েন তিনি।
বৃহস্পতিবার ইসলামাবাদে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে এক অনুষ্ঠানে আবেগজড়িত কণ্ঠে নিজ দেশে ফেরার স্বপ্নের কথা বলেন এই তরুণি।
সরাসরি টেলিভিশনে প্রচারিত ওই বক্তব্যে মালালা বলেন, “গত ৫ বছর ধরে আমি দেশে আসার স্বপ্ন দেখেছি।”
বাষ্পরুদ্ধ কন্ঠে তিনি বলেন, “আজ আমি খুবই আনন্দিত। আমি সাড়ে পাঁচ বছর পর আবার আমার দেশের মাটিতে পা রাখতে পেরেছি।”
তবে পাকিস্তানে ফিরতে পারলেও মালালা তার নিজ বাড়িতে ফিরতে পারবেন কিনা তা শুক্রবার রাত পর্য়ন্তও নিশ্চিত ছিল না। কারণ, খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশ এখনও জঙ্গিদের শক্তঘাঁটি।
মালালার ফেরা উপলক্ষ্যে শনিবার সোয়াত ভ্যালিতে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। মিনগোরা শহরে মালালার বাড়িতে যাওয়ার সব রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে পুলিশ।
এই সফরে মালালা চারদিন পাকিস্তানে থাকবেন বলে জানান মালালা ফান্ড গ্রুপের কর্মকর্তারা।
মিনগোরার যে স্কুলে একসময় মালালা পড়তেন সেই স্কুলের ছাত্রী আরফা আখতার বলে, “মালালা পাকিস্তানে আসায় আমরা খুব খুশি। আমিও মালালা। মালালার এই লড়াইয়ে আমি তার সঙ্গে আছি।”
৬৬ বছরের বৃদ্ধ বরকত আলি, যার কোলেপিঠে মালালার শৈশব কেটেছে।
তিনি বলেন, মেয়েদের শিক্ষার অধিকারের জন্য মালালা যেভাবে লড়াই করছে তাতে তিনি গর্বিত বোধ করছেন।
“যারা বলবে আমাদের মেয়েদের স্কুলে যাওয়ার অধিকার নেই তারা আসলে সব বৃদ্ধ মূর্খ। নতুন প্রজন্ম অনেক বেশি বিচক্ষণ। তারা তাদের কন্যাদের শিক্ষার আলো দিতে চায়।”
তবে পাকিস্তানের সবাই মালালাকে স্বাগত জানায়নি। কেউ কেউ মালালার বিরুদ্ধে নিজ দেশের অসম্মান করে বিদেশে ক্যারিয়ার গড়ার অভিযোগ করেছে।
পূর্বের শহর লাহরে কয়েকটি বেসরকারি স্কুলের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা মালালার আগমনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছে। সেখানে শিক্ষার্থীরা ‘আমি মালালা নই’ বলে শ্নোগান দেয়।
তাদের একজন কাশিফ মির্জা বলেন, “মালালা সত্যিকারে পাকিস্তানকে উপস্থাপণ করে না।
“সে বিদেশে গিয়ে পাকিস্তান, ইসলাম ও পাকিস্তানের সেনাবাহিনীকে অসম্মান করেছে।”
তবে পক্ষে-বিপক্ষে যত কথাই হোক মালালার শহরের বাসিন্দারা চান মালালা আবারও তাদের মাঝে ফিরে আসুক।
তাদের একজন জাওয়াদ ইকবাল বলেন, “সোয়াত ও পুরো পাকিস্তানের জনগণ মালালার সঙ্গে আছে। আল্লাহ চায় তো একদিন আমরা শিক্ষা, কলম, শিক্ষক ও বইয়ের মাধ্যমে সন্ত্রাস ও চরমপন্থাকে প্রতিরোধ করতে পারবো।”