নিউজ ডেস্ক, বঙ্গনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম.
পুলিশের অনুমতি এখনও না পাওয়ার মধ্যেই ঢা্কার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভায় ব্যাপক লোক সমাগমের প্রস্তুতি চালাচ্ছে বিএনপি।
দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে সোমবার ঢাকায় এই জনসভা করতে চায় বিএনপি।
শনিবার দুপুর পর্যন্ত পুলিশের অনুমতি পাওয়া যায়নি বলে এক সংবাদ সম্মেলনে জানান বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল করিব রিজভী।
তিনি বলেন, “জনসভার ব্যাপারে আমরা এখনও কিছু জানি না। দেখা যাক, আজকে-কালকের দিন আছে।
“যখনই তারা (পুলিশ) বলবে, আমাদের সকল প্রস্তুতি রেখেছি। বিশাল মানুষের ঢল হবে এই জনসভায়।”
দলীয় নেত্রীর মুক্তি দাবিতে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় ঢাকাসহ বিভাগীয় শহরে জনসভা করছে বিএনপি। শনিবার খুলনায় জনসভা হচ্ছে।
রিজভী বজানান, খুলনার পর ৩১ মার্চ রাজশাহীতে জনসভা হবে। ১৫ মার্চ চট্টগ্রামে জনসভা হবে। অন্য শহরগুলোতে স্থানীয় নেতারা বসে দিন ঠিক করবেন।
ওবায়দুল কাদের ‘বেসামাল মিথ্যাবাদী’
গত বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচির অনুমতি নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে তাকে ‘বেসামাল মিথ্যাবাদী’ বলেছেন রিজভী।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “তিনি (কাদের) বলেছেন, বিএনপি বেআইনিভাবে সমাবেশ করেছে। এত বড় টাটকা মিথ্যা কথা তিনি কীভাবে বললেন? তাকে বেসামাল মিথ্যাবাদী ছাড়া আর কী বা বলতে পারি?
“একজন রাজনীতিবিদ যদি এভাবে অবলীলায় মিথ্যা কথা বলেন, তাহলে দেশের জনগণ ও ও শিক্ষার্থীরা কী জানবে যে রাজনীতিবিদরা অনর্গল মিথ্যা কথা বলেন, সত্যের অপলাপ ঘটান।”
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালনে পুলিশের অনুমতি ছিল বলে দাবি করেন রিজভী।
“আমরা যে কর্মসূচির অনুমতি চেয়ে পুলিশকে চিঠি দিয়েছি, তার রিসিভড কপি আমাদের কাছে আছে। পুলিশ কমিশনার সাহেব আমাদের মহাসচিবকে মৌখিকভাবে অনুমতির কথা বলেছেন।
“আমরা তো অবস্থান কর্মসূচি আমাদের দলীয় কার্যালয়ের সামনে করতে চেয়েছি। পুলিশ আমাদের বলেছে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে করতে। আমরা তাদের কথা অনুযায়ী প্রেস ক্লাবের সামনে করেছি।”
বৃহস্পতিবারের অবস্থান কর্মসূচি থেকে ‘নির্মমভাবে টেনে-হেঁচড়ে’ গ্রেপ্তার হওয়া ছাত্রদল নেতা মিজানুর রহমান রাজকে রিমান্ডে নেওয়ার নিন্দাও জানান রিজভী।
‘নিম্ন আদালতে জামিন নেই’
নিম্ন আদালতে বিরোধী নেতা-কর্মীদের জামিন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি নেতা রিজভী।
তিনি বলেন, “বেগম খালেদা জিয়ার রায়কে কেন্দ্র করে দেড় মাসে প্রায় ৬ হাজার নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের জামিন পাওয়ার যে অধিকার, সেটিও সরকার নিম্ন আদালতকে কবজা করে বন্ধ করে রেখেছে। আদালতের দুয়ার যেন বিএনপি ও বিরোধী দল ও মতের মানুষদের জন্য বন্ধ।”
বিএনপি নেতা-কর্মীদের কর্মসূচি থেকে গ্রেপ্তারের পাশাপাশি তাদের বাড়িতে পুলিশ হানা দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন রিজভী।
“বাড়িতে বাড়ি তল্লাশি চালিয়ে গ্রাম-শহর থেকে নেতা-কর্মীদের উচ্ছেদ করা হচ্ছে। তাদের না পেয়ে স্ত্রী-সন্তান, পিতা-মাতা-ভাই-বোনকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। থানায় নিয়ে গিয়ে তাদের উপর চালানো হচ্ছে নির্যাতন।”
গত ৭ মার্চ ক্ষমতাসীন দলের সমাবেশমুখী মিছিলের মধ্যে এক তরুণী লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনার নিন্দা জানিয়ে একে ‘আওয়ামী উন্নয়নের নমুনা’ বলে মন্তব্য করেন রিজভী।
নয়া পল্টনে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে রিজভীর সঙ্গে ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আতাউর রহমান ঢালী, সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম আজাদ, তাইফুল ইসলাম টিপু, বেলাল আহমেদ।