ক্রীড়া ডেস্ক, বঙ্গনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম.
দক্ষিণ আফ্রিকা সফর থেকেই সমস্যাটা খুব বড় আকারে ধরা পড়েছে। বাংলাদেশের পেসারদের বোলিংয়ের ধার নেই বললেই চলে। দক্ষিণ আফ্রিকার বাউন্সি উইকেটে বাংলাদেশের পেসাররা ছিলেন একেবারেই নখ-দন্তহীন বাঘ। দক্ষিণ আফ্রিকা সফর করে আসার পর অজুহাত ছিলো, ‘বিদেশের মাটি, তাই ভালো করা সম্ভব হয়নি।’ দেশের মাটিতে নিজেদের চেনাতে কসুর করবে না বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা।
মাঝে কেটে গেলো জমজমাট বিপিএলের আসর। পুরো আসরজুড়ে খেলার সুযোগ পেয়েছেন ক্রিকেটাররা। নিজেদের প্রমাণ করতে এই আসরই ছিল যথেষ্ট। যদিও বাংলাদেশের কোনো পেসার সেভাবে বিশেষ কোনো পারফরম্যান্স দিয়ে কারও নজর কাড়তে পারেননি। এরপরই এলো ত্রিদেশীয় সিরিজ। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হোম সিরিজ।
বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের প্রমাণ করার দারুণ এক মঞ্চ। এমনিতেই গত কয়েক বছর তো ঘরের মাঠে বিদেশি যে কোনো দলের জন্য রীতিমত ত্রাস হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতেই পারলেই চলবে, আর কিছু প্রয়োজন হবে না। ওয়ানডে ফরম্যাচে ত্রিদেশীয় সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে উড়ন্ত সূচনা দিয়ে ভালো কিছুর ইঙ্গিতই দিচ্ছিল বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা।
কিন্তু শ্রীলঙ্কার কাছে ৮২ রানে অলআউট হওয়া দিয়ে যে অধঃপতনের শুরু হয়েছে, সেটাকে ঠেকানো যায়নি আর। শেষে ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে হার, টেস্টে ১-০ ব্যবধানে এবং টি-টোয়েন্টিতে ২-০ ব্যবধানে পরজায়। সব মিলিয়ে বাংলাদেশের ব্যর্থতার ষোলকলা পূর্ণ হয়েছে। ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কার কাছে এভাবে নাকাল হওয়ার পর বিসিবির টনক নড়েছে, সময় থাকতে কিছু করতে হবে। না হয় রক্ষা নেই।
শ্রীলঙ্কা সিরিজ শেষ হওয়ার ২দিন পর টিম ম্যানেজমেন্ট এবং সিনিয়র কয়েকজন ক্রিকেটারের সঙ্গে বৈঠকে বসে নিজের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন বিসিবি প্রেসিডেন্ট নাজমুল হাসান পাপন। পরে সংবাদ মাধ্যমকে তিনি সে কথা নিজেই জানান। একই সঙ্গে পরিস্থিতি উত্তরণে তড়িৎ ব্যবস্থা গ্রহণেরও আশ্বাস দেন।
ওই বৈঠকেই পাপন পেস বোলিং কোচ কোর্টনি ওয়ালশকে নির্দেশ দিয়েছেন, পেসারদের নিয়ে স্পেশাল ট্রেনিং ক্যাম্প পরিচালনা করতে। কারণ, সামনেই শ্রীলঙ্কা সফর। সেখানে খেলতে হবে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা এবং ভারতের বিপক্ষে। এ কারণে, ১৪জন পেসারকে নিয়ে বিশেষ এই ক্যাম্পের কথা জানান বিসিবি প্রধান।
অবশেষে প্রেসিডেন্টের নির্দেশমতই ১৪ পেসার নিয়ে ৯ দিনের বিশেষ ক্যাম্প পরিচালনার উদ্যোগ নিয়েছেন পেস বোলিং কোচ কোর্টনি ওয়ালশ। সে মতে, ১৪ জনকে নিয়ে আগামীকাল (শুক্রবার) থেকেই শুরু হচ্ছে সেই বিশেষ প্রশিক্ষণ শিবির। ১৪ পেসারের সঙ্গে রাখা হয়েছে ৫জন ব্যাটসম্যানকেও। বিশেষ সেই ক্যাম্পে অনুশীলন চলবে ব্যাটসম্যানদেরও।
ক্যাম্পে ডাক পাওয়া ১৪ পেসার হচ্ছে
তাসকিন আহমেদ, আবু জাহিদ রাহি, মোস্তাফিজুর রহমান, আবুল হাসান রাজু, আবু হায়দার রনি, মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন, কামরুল ইসলাম রাব্বি, রুবেল হোসেন, এবাদত হোসেন, হাসান মাহমুদ, মোহাম্মদ রবিউল, খালেদ আহমেদ, কাজি অনিক, হোসাইন আলি।
এই ১৪ জনের সঙ্গে ডাক পাওয়া ৫ ব্যাটসম্যান হচ্ছেন ইমরুল কায়েস, সৌম্য সরকার, আরিফুল হক, জাহির হাসান ও সাব্বির রহমান (বিসিবির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে লেখা হয়েছে সাব্বির আহমেদ)। ডাক পাওয়া ১৪ পেসারের মধ্যে যদিও মোস্তাফিজুর রহমান নেই। তাকে পাকিস্তান সুপার লিগে খেলার অনুমতি দিয়েছে বিসিবি। সে মতে মঙ্গলবার রাতেই আরব আমিরাত পৌঁছে যান মোস্তাফিজ। তার অবস্থান কী হবে, সেটা জানায়নি বিসিবি।
৯দিনের এই বিশেষ প্রশিক্ষণ ক্যাম্প শুরু হবে প্রতিদিন সকাল সাড়ে ৯টায় মিরপুরস্থ বিসিবি ন্যাশনাল একাডেমি মাঠে। আড়াই ঘণ্টার এই প্রশিক্ষণ শেষ হবে দুপুর ১২টায়। প্রতিদিনই হবে স্কিল ট্রেনিং। ২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া এই প্রশিক্ষণ ক্যাম্প শেষ হবে ৩ মার্চ। মাঝে একদিন (২ মার্চ) থাকবে রেস্ট ডে।