কাইছার ইকবাল চৌধুরী, বঙ্গনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমঃ
চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলায় সিএনজি চালক আব্দুল মোনাফ হত্যাকান্ডের মূল রহস্য উদঘাটন করে লোহাগাড়া থানা পুলিশ। ১৯ ফেব্রুয়ারী সন্ধ্যা ৭টায় থানা পুলিশ কর্তৃক আয়োজিত প্রেস ব্রিফিং-এ এসব তথ্য জানা যায়।
জানাগেছে, গত ৭ ফেব্রুয়ারী উপজেলার চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পদুয়া ঠাকুরদিঘীর পশ্চিম পার্শ্বে ফসলি জমি থেকে সিএনজি চালক আব্দুল মোনাফের লাশ উদ্ধার করে থানা পুলিশ। এঘটনায় নিহতের স্ত্রী খতিজা বেগম অজ্ঞাতনামাকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। মামলা রুজু হওয়ার পর রহস্য উদঘাটনের লক্ষ্যে সাতকানিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাসানুজ্জামান মোল্যা ও থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, ওসি (তদন্ত) মোহাম্মদ জহির উদ্দিনের নেতৃত্বে তদন্ত কর্মকর্তা মোঃ নুরুন্নবীর চৌকস অভিযানে রহস্য উদঘাটন ও আসামীদের ধরতে সক্ষম হয়।
সাইফুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানায়, ভিকটিমের মোবাইল ফোন ও সংগৃহীত সাক্ষ্য প্রমাণ ও গোপন তথ্যের ভিত্তিতে কিশোর অপরাধী মোঃ মিজানুর রহমান সাহেদ(১৭)কে প্রথমে আটক করা হয়। আটক কিশোর সাহেদ উপজেলার পদুয়া ইউনিয়নের নোয়া পাড়ার ৩ নং ওয়ার্ডের আবু তাহেরের পুত্র। তার দেওয়া তথ্যমতে খুনের সাথে জড়িত অপর দুই আসামী একই ইউনিয়নের মৌলভী পাড়ার মোঃ মুছা প্রকাশ কালন সওদাগরের পুত্র সিএনজি চালক মোঃ খোরশেদ আলম (২৭) ও সাতকানিয়া থানার দক্ষিণ ছদাহা মুন্সী পাড়ার ৮ নং ওয়ার্ডের আবু তাহেরের পুত্র মোঃ হাসান (৩২)কে আটক করা হয়।
তাদের দেওয়া ১৬৪ ধারা জবানবন্দিতে কিশোর অপরাধী মিজানুর রহমান সাহেদ ও খোরশেদ এক লোমহর্ষক খুনের ঘটনার বর্ণনা দেন। তারা বলেন, ভিকটিম আব্দুল মোনাফ একজন বিকৃত যৌনরুচি সম্পন্ন ব্যক্তি। সে কিশোর অপরাধী মিজানুর রহমান সাহেদের সাথে যৌন ক্রিয়ায় (বলৎকার) লিপ্ত ছিল। ঘটনার দিন রাত ৯টায় সাহেদকে নিয়ে ভিকটিম আব্দুল মোনাফ হিউম্যান হলার(ম্যাজিক) গাড়ীতে করে ঠাকুর দিঘীর বাজারের দিকে রওনা করলে খোরশেদ ও মোঃ হাসান তাদের পিছু নেয়। ঘটনাস্থলে পৌছলে ভিকটিম আব্দুল মোনাফ কোমর থেকে প্লাষ্টিকের চাউলের বস্তার চট বের করে জমিতে বিছিয়ে মিজানুর রহমান সাহেদকে বলৎকার করার সময় আসামী খোরশেদ আলম ও মোঃ হাসান মোনাফকে হাতেনাতে ধরে পেলে। পরে গালমন্দ করে এক পর্যায়ে সাহেদ ও খোরশেদ ভিকটিমের গলায় থাকা মাফলার দিয়ে শ্বাসরুদ্ধ করে আর মোঃ হাসান কোমর থেকে ধারালো ছাকু বের করে মোনাফকে মাথায় এলোপাতাড়ি আঘাত করে খুন করে পালিয়ে যায়।
ঘটনার মাত্র ১১ দিনের মাথায় পুলিশ এ হত্যা কান্ডের মূল রহস্য উদঘাটন করে। প্রেস ব্রিফিং এ সাতকানিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাসানুজ্জামান মোল্যা, থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, ওসি (তদন্ত) মোহাম্মদ জহির উদ্দিন, সেকেন্ড অফিসার মোঃ আব্দুল হক, এসআই নুরুন্নবী, এসআই সোহেল সিকদার ও অন্যান্য অফিসারগণসহ স্থানীয় গনমাধ্যমকর্মিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।