, বুধবার, ২২ মার্চ ২০২৩

বুধবার

বিষয় :

প্রকাশ :  ২০১৭-১২-০১ ১৯:০৬:০৪

পেঁয়াজের সঙ্গে বেড়েছে কাঁচামরিচের ঝাঁজ

রাজধানীর বাজারগুলোতে পেঁয়াজের ঝাঁজ এখনো কমেনি। আমদানিকৃত পেঁয়াজ প্রতিকেজি ৯০ টাকা হলেও দেশি পেঁয়াজের দাম সেঞ্চুরি হেঁকেছে। তবে দামের দৌড়ে পেঁয়াজকে পেছনে ফেলেছে নিত্যপ্রয়োজনীয় কাঁচামরিচ। রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে কেজিপ্রতি কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা দরে। পেঁয়াজ ও কাঁচামরিচের এই ‘ঝাঁজ’ কমতে আরও কয়েকদিন অপেক্ষা করতে হবে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

রাজধানীর কারওয়ানবাজার, হাতিরপুল, রায়সাহেব বাজার ও পলাশী বাজার ঘুরে এই তথ্য পাওয়া গেছে।

রাজধানীর বড় বাজারগুলোর মধ্যে একটি হলো পুরান ঢাকার রায়সাহেব বাজার। সেখানে প্রতি কেজি আমদানিকৃত পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮৫ টাকা দরে। যেখানে গত দুই সপ্তাহ আগেও এই পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছিল ৭০ টাকা দরে। দুই সপ্তাহের ব্যবধানে বিদেশি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ১৫ টাকা। আর দেশীয় পেঁয়াজের তো কথাই নেই। দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা কেজি দরে। যা দুদিন আগেও ছিল ৯০ টাকা কেজি।

পুরান ঢাকার বাংলাবাজার থেকে রায়সাহেব বাজারে এসেছেন একরামুল হক। তিনি ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘সবজির দাম একটু কম থাকায় মনটা ভালো হয়েছিল। কিন্তু পেঁয়াজ কিনতে এসে হোঁচট খেলাম। সপ্তাহখানেকের তুলনায় কেজিতে ১৫ টাকার বেশি বেড়েছে। এটা কী করে সম্ভব? কী এমন ঘটনা ঘটল যে, কয়েক দিনের ব্যবধানে এত টাকা বাড়াতে হবে? নিশ্চই কোনো কারসাজি আছে। কিন্তু কার কাছে অভিযোগ করব? বাজার তো মনিটরিং হয় না।’

এছাড়াও রাজধানীর কারওয়ান বাজার, হাতিরপুল ও পলাশী বাজার ঘুরে পেঁয়াজের আকাশছোঁয়া দাম লক্ষ্য করা যায়। কারওয়ানবাজারে প্রতিকেজি বিদেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮৫ থেকে ৯০ টাকা দরে। আর দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯৫ থেকে ১০০ টাকা দরে। এখানকার ব্যবসায়ীরা জানান, বাজারে দেশি পেঁয়াজ থেকে বিদেশি পেঁয়াজের চাহিদা বেশি। দেশি পেঁয়াজের দাম বেশি থাকায় ক্রেতারা বিদেশি পেঁয়াজ বেশি কিনছেন।

কারওয়ানবাজারে পেঁয়াজের পাইকারি ব্যবসায়ী সুলাইমান হোসেন ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘চাহিদা থাকায় পেঁয়াজের দাম বেশি বাড়তি। যোগান অহন একেবারেই কম। তয় পেঁয়াজের দাম কমলেও ৭০-৭৫ এর নিচে যাইতো না।’

পলাশী বাজারে এসেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের শিক্ষক তৈয়বুর রহমান। তিনি ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘বাজারের সবধরনের পণ্যের এত দাম হলে মানুষ খাবে কী? দ্রব্যমূল্য যেভাবে বাড়ছে সেভাবে আমাদের আয়তো বাড়ছে না।’

এই শিক্ষক বলেন, ‘পেঁয়াজ কেনার ইচ্ছা ছিল পাঁচ কেজি, দাম বেশি বিধায় তিন কেজির বেশি কিনতে পরলাম না। সরকারের উচিত বাজার মনিটরিং করা। তা না হলে মানুষকে না খেয়ে থাকতে হবে।’

এদিকে পেঁয়াজের পাশাপাশি রাজধানীর কাঁচাবাজারগুলোতে একদিনের ব্যবধানে কাঁচামরিচের দাম বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। প্রতিকেজি কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকায়।

রাজধানীর হাতিরপুল বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ব্যবসায়ীরা প্রতিকেজি কাঁচামরিচ বিক্রি করছেন ১৩০ টাকায়। তবে ১০০ গ্রাম মরিচ কিনতে দাম পড়ছে ১২ টাকা।

এছাড়া বাজারে কোনো ব্যবসায়ী ১০০ গ্রাম মরিচ ১২ থেকে ১৫ টাকা এবং ২৫০ গ্রাম মরিচ ৩৫ টাকার নিচে বিক্রি করছেন না। অথচ একদিন আগেও ব্যবসায়ীরা ২৫০ গ্রাম মরিচ ২৫ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি করেছেন।

হাতিরপুল বাজারের কাঁচাসবজি ব্যবসায়ী মো. বেলায়েত ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আড়তে মরিচের দাম বেড়ে গেছে। গত কয়েক দিনের তুলনায় এখন দিগুণ দাম দিয়ে আড়ত থেকে মরিচ আনতে হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বেশি দাম দিয়েও আড়তে মরিচ পাওয়া যাচ্ছে না। আমি অল্পকিছু পেয়েছি। কিন্তু এখানকার অধিকাংশ ব্যবসায়ীই আড়তে গিয়ে মরিচ পাননি।’

পলাশী বাজারে গিয়ে দেখা যায়, ব্যবসায়ীরা ২৫০ গ্রাম কাঁচামরিচ ৬০ টাকা দরে বিক্রি করছেন। সে হিসাবে বাজরটিতে প্রতিকেজি মরিচের দাম পড়ছে ২৪০ টাকা।

বাজারটির ব্যবসায়ী মো. আলামিন ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘বাজারে মরিচের সরবরাহ কম, তাই দাম বেড়ে গেছে। একদিন আগেও ২৫০ গ্রাম মরিচ ৩০ থেকে ৩৫ টাকায় বিক্রি করেছি।‘

কারওয়ানবাজারে আসা ক্রেতা মো. জামাল ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘একের পর এক জিনিসের দাম বাড়ছে। কিন্তু কেউ কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। সব বোঝা এসে পড়ছে আমাদের মতো স্বল্প আয়ের মানুষের ওপর। এর আগে পেঁয়াজের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়লো, এখন আবার মরিচের দাম বেড়েছে। এভাবে চলতে থাকলে তো আমাদের জীবন চালানো দুরূহ হয়ে পড়বে।’

আরো সংবাদ

সম্পাদক ও প্রকাশক: কাইছার ইকবাল চৌধুরী

ব্যবস্থাপনা সম্পাদক: এম. সামুন হোসেন

Best Group কর্তৃক প্রকাশিত।
E-mail: banghonews24@gmail.com